
ব্যালন ডি’অরে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে এতদিন বাংলাদেশি সাংবাদিকরা ভোট দিতে পারতেন। তবে আসছে মৌসুম থেকে সেই সুযোগ আর পাচ্ছে না বাংলাদেশি সাংবাদিকরা। ব্যালন ডি’অরের সেরা ফুটবলার নির্বাচনের ক্ষেত্রে নতুন কিছু নিয়ম চালু করছে ফ্রান্স ফুটবল কর্তৃপক্ষ; যে কারণে ভোট দেওয়া থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশি সাংবাদিকরা।
এ ছাড়াও ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলার নিয়ে যাতে কোনো বিতর্ক না হয়, এ জন্য মোট চারটি নিয়ম পরিবর্তন করেছে ফ্রান্স ফুটবল কর্তৃপক্ষ।
বছর নয়, মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হবে
ব্যালন ডি’অরে এতদিন বছরব্যাপী পারফরম্যান্সকে বিবেচনায় এনে পুরস্কার দেওয়া হতো। যার ফলে ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুটি আলাদা মৌসুমের অর্ধেক করে বিবেচনায় আসত। প্রথম মৌসুমের জানুয়ারি থেকে জুলাই এবং দ্বিতীয় মৌসুমের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হতো।
তবে এবার থেকে আগস্ট থেকে জুলাই পর্যন্ত পুরো মৌসুমের পারফরম্যান্স বিবেচনায় সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করা হবে।
অর্থাৎ, ২০২২ ব্যালন ডি’অরের জন্য ২০২১-২২ মৌসুমের পারফরম্যান্সই কেবল বিবেচনায় আসবে। কাতার বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স বিবেচিত হবে ২০২৩ ব্যালন ডি’অরের জন্য।
বিশেষজ্ঞদের দ্বারা তৈরি হবে তালিকা
ফ্রান্স ফুটবল ও লে’কিপের লেখকরা এতদিন ধরে ব্যালন ডি’অরের ক্যান্ডিডেট (পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩০ জন, মেয়েদের ২০ এবং তরুণদের ক্ষেত্রে ১০ জন) নির্বাচিত করতেন। যার ফলে তালিকায় থাকা নামগুলো নিয়ে প্রশ্ন বা তর্ক থেকে যেত।
এই সমস্যা দূর করতে এবার তাদের সঙ্গে কাজ করবেন দিদিয়ের দ্রগবাও। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে ভোটে ভালো পর্যবেক্ষণ শক্তি দেখানোয় ছেলেদের ক্ষেত্রে ভিয়েতনামের সাংবাদিক থ্রুং আন এনগোচে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা হ্লাভাচকোভার কাছ থেকে নাম চাওয়া হবে। এরপর সবার নাম থেকে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
ভোট দিতে পারার তালিকায় পরিবর্তন
১৯৫৬ সালে মাত্র ১৬ জন ভোট দিয়েছিলেন ব্যালন ডি’অরে। সেটা বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালে এসে ১৭০-এ উঠে এসেছে। তবে এবার বিচারকের সংখ্যা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০০ দেশের সাংবাদিক ছেলেদের শ্রেষ্ঠত্ব নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রথম ৫০ দেশের সাংবাদিক ভোট দিতে পারবেন।
এই নিয়মের কারণে বাংলাদেশ, ভারতসহ উপমহাদেশের কোন দেশই ভোট দিতে পারবে না। বাংলাদেশের বর্তমান র্যাঙ্কিং ১৮৬।
দলগত নয়, ব্যক্তিগত সাফল্য প্রধান বলে বিবেচিত হবে
ব্যালন ডি’অর ব্যক্তিগত অর্জনের পুরষ্কার বলে এখন থেকে খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত অর্জন প্রথমে বিবেচ্য হবে। এরপর দলগত সাফল্য বিবেচ্য হবে। তৃতীয়ত খেলোয়াড়ের মান এবং খেলোয়াড়ি চেতনা দেখা হবে। এর আগে খেলোয়াড়ের অতীত পারফরম্যান্স বিবেচনায় আনা হলেও, এখন থেকে তা আর করা হবে না।
উপরিউক্ত নিয়মগুলো বিবেচনায় নিলে এবার লিওনেল মেসি (৭ বার ব্যালন জিতেছেন) বা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর (৫ বার) ব্যালন ডি’অর জেতার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ব্যালন ডি’অরের সবচেয়ে সফল দুই ফুটবলার এবার দলগত বা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে নিজেদের সেরা অবস্থায় নেই। বরং গতবারের অন্যতম সেরা রবার্ট লেভানদোভস্কি এবং করিম বেনজেমা প্রথমবারের মতো পুরস্কারটি জয়ে এগিয়ে আছেন।